আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২৫৭ মিলিয়ন জনগোষ্ঠী (বিশ্ব জনসংখ্যার ৩.৪%) কাজের জন্য বা অন্য কোনো প্রয়োজনে নিজ দেশে বাস না করে অন্য দেশে বাস করছেন এবং উভয় দেশেরই আর্থ-সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন। বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী ২০১৭ সালে ৬১৩ বিলিয়ন ইউএস ডলার প্রবাসী আয় হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জাতীয় আয়ে যুক্ত হয়েছে। বিশ্বের যে কোনো দেশের মতোই বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে অভিবাসন খাতটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ শুধু এই খাত থেকে প্রায় ১৫ বিলিয়ন ইউএস ডলার আয় করেছে।
২০১৮ সালে বাংলাদেশে থেকে মোট ৭ লাখ ৩৪ হাজার কর্মী বিদেশ গিয়েছেন। এদের মধ্যে নারী কর্মীর সংখ্যা ১ লাখ ১ হাজার ৬০৯ জন। বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার পেছনে অভিবাসন খাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় তথ্যের অভাবে অভিবাসনপ্রত্যাশীরা প্রতিনিয়ত প্রতারণার সম্মুখীন হচ্ছেন। ব্র্যাক বিশ্বের সর্ববৃহৎ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা। ২০০৬ সাল থেকে বাংলাদেশের অভিবাসনপ্রবণ জেলাসমূহে নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত, মানবপাচার প্রতিরোধ ও সচেতনতা সৃষ্টি এবং বিদেশফেরত অভিবাসীদের পুনরেকত্রীকরণের লক্ষ্যে ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিবছর প্রবাস থেকে অনেক মানুষ দেশে ফেরত আসে। কিন্তু তাদের বিষয়টি একেবারে উপেক্ষিত থেকে যায়। বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) সহযোগিতায় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম সারাদেশে বিদেশফেরতদের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে।
অভিবাসী কর্মী ও তাদের পরিবারের অধিকার রক্ষায় গণমাধ্যমের ভূমিকা অনস্বীকার্য ও প্রশংসনীয়। অভিবাসনবিষয়ক সাংবাদিকতাকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিতে ব্র্যাক ২০১৫ সাল থেকে প্রথমবারের মতো ‘অভিবাসন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় বস্তুনিষ্ঠ অভিবাসন সাংবাদিকতাকে অনুপ্রাণিত করতে ‘অভিবাসন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড’ ২০১৮ ঘোষণা করা হবে। এটি হবে চতুর্থ অভিবাসন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড।
যেসব বিভাগে/ক্যাটাগরি ‘অভিবাসন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড’-২০১৮ প্রদান করা হবে
(ক) সংবাদপত্র (জাতীয়): অভিবাসন বিষয়ে দেশে ও বিদেশে যে কোনো জাতীয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন।
(খ) সংবাদপত্র (আঞ্চলিক): অভিবাসন বিষয়ে বাংলাদেশের যে কোনো আঞ্চলিকসংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন।
(গ) টেলিভিশন: অভিবাসন বিষয়ে দেশে ও বিদেশে যে কোনো বেতারে সম্প্রচারিত অনুষ্ঠান/প্রতিবেদন।
(ঘ) রেডিও: অভিবাসন বিষয়ে দেশে ও বিদেশে যে কোনো বেতারে সম্প্রচারিত অনুষ্ঠান/প্রতিবেদন।
(ঙ) অনলাইন: অভিবাসন বিষয়ে দেশে ও বিদেশে যে কোনো অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন।
(চ) আলোকচিত্র: অভিবাসন বিষয়ে দেশে ও বিদেশে যে কোনো গণমাধ্যমে প্রকাশিত আলোকচিত্র।
(ছ) ব্লগ: অভিবাসন বিষয়ে দেশ ও বিদেশে যে কোনো ব্লগে প্রকাশিত ব্লগ।
প্রতিবেদন/অনুষ্ঠান/আলোকচিত্রসমূহের প্রকাশ/প্রচারের সময়সীমা
সংবাদপত্র, বেতার, টেলিভিশন, অনলাইন সংবাদমাধ্যম অথবা ব্লগে দেশে অথবা প্রবাসে কর্মরত যেকোনো বাংলাদেশি সাংবাদিক, ব্লগার অথবা গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব আবেদন করতে পারবেন। অভিবাসনবিষয়ক প্রতিবেদন/অনুষ্ঠান/আলোকচিত্রসমূহ অবশ্যই ১লা জানুয়ারি, ২০১৮ থেকে ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ র মধ্যে প্রকাশিত/প্রচারিত হতে হবে।
যোগ্যতা ও সতর্কতা
অ্যাওয়ার্ডের জন্য জমা দেওয়া প্রতিবেদন/অনুষ্ঠান/আলোকচিত্রসমূহের স্বত্বাধিকারনিশ্চিত করতে হবে। সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন/আলোকচিত্রসমূহের অনলাইন লিংক এবং টেলিভিশনে প্রচারিত প্রতিবেদন/অনুষ্ঠানের ইউটিউব লিংক প্রতিবেদনের সঙ্গে জমা দিতে হবে। যদি অনলাইন লিংক বা ইউটিউব লিংক না থাকে সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের সম্পাদক/বার্তা সম্পাদক কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে (১লা জানুয়ারি, ২০১৮- ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮) সংবাদ/অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হয়েছে মর্মে (প্রকাশ/প্রচারের তারিখ উল্লেখসহ) সত্যায়নপত্র সংযুক্ত করতে হবে।
- অসম্পূর্ণ/ভুল তথ্যসংবলিত আবেদন বাতিল বলে গণ্য হবে।
আবেদন করার নিয়ম
১. শুধুমাত্র বাংলাদেশি সাংবাদিক, গণমাধ্যমে ব্যক্তিত্ব এবং ব্লগাররা এই অ্যাওয়ার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
২. আবেদনকারীকে অবশ্যই তাঁর জীবনবৃত্তান্ত যথাযথ ফরমেটের মাধ্যমে (ফরমেটটি সর্বশেষ পাতায় সংযুক্ত) পাঠাতে হবে। প্রয়োজনীয় নথি হিসেবে প্রতিবেদন, আলোকচিত্র যে মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে তার বিবরণ জমা দিতে হবে।
৩. আবেদনকারী তাঁর কর্মজীবন সম্পর্কে অর্ধেক পাতার মধ্যে সংক্ষিপ্ত বিবরণ (বাংলা ও ইংরেজি ভাষায়) সংযুক্ত করে পাঠাবেন। সংযুক্ত ফরমেটটি পূরণ করে আবেদনপত্রের সঙ্গে পাঠাতে হবে।
মূল্যায়ন মানদন্ড
অভিবাসন খাত, অভিবাসী ও শরণার্থী কিংবা তাদের পরিবারের অধিকার রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এমন প্রতিবেদন (প্রকাশিত বা সম্প্রচারিত)।
‘অভিবাসন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড’২০১৮-তে যেসব বিভাগ/ক্যাটাগরি বিবেচনায় আনা হবে
১. প্রিন্ট মিডিয়ার প্রতিবেদনের ক্ষেত্রে (জাতীয় ও স্থানীয় উভয় ক্ষেত্রে) সংবাদপত্রে প্রকাশিত মূল কপিটি প্রেরণ করতে হবে। সংবাদপত্রের এবং প্রতিবেদকের নাম ও তারিখ অবশ্যই দৃশ্যমান হতে হবে। সংযুক্তি হিসেবে হার্ডকপি ছাড়াও সিডির মাধ্যমে সফটকপি জমা দিতে হবে।
২. বেতারের ক্ষেত্রে এএম এবং এফএম বেতারতরঙ্গে সম্প্রচারিত অনুষ্ঠান অথবা প্রতিবেদন হতে হবে। এর সঙ্গে সংক্ষিপ্ত/সম্পূর্ণ স্ক্রিপ্ট যদি বর্তমান থাকে তবে জমা দিতে হবে। নিয়মিত বেতারে সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানের অন্তত পরপর তিনটি অনুষ্ঠানের কপি জমা দিতে হবে।
৩. টেলিভিশনের ক্ষেত্রে অবশ্যই সংক্ষিপ্ত এবং সম্পূর্ণ স্ক্রিপ্ট (যদি বর্তমান থাকে) সহকারে ডিভিডি-র মাধ্যমে জমা দিতে হবে।
৪. অনলাইন মিডিয়ার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র প্রতিবেদনটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হতে হবে এবং অনলাইনে যেভাবে প্রচারিত হয়েছে সেভাবে সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনটি স্ক্রিনশটসহ জমা দিতে হবে। এ ছাড়াও ইউআরএলসহ সফটকপি সিডিতে জমা দিতে হবে।
৫. আলোকচিত্রের ক্ষেত্রে আলোকচিত্রটি যেকোন মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে তার কপি ও লিংক সংযুক্ত করতে হবে। গণমাধ্যমে যেভাবে প্রকাশিত হয়েছে ঠিক সেভাবেই সংশ্লিষ্ট আলোকচিত্রসহ প্রকাশিত প্রতিবেদনটি জমা দিতে হবে। হার্ডকপি ছাড়াও সফট কপি সংযুক্তি হিসেবে সিডি-র মাধ্যমে জমা দিতে হবে।
৬. ব্লগে প্রকাশিত অভিবাসন বিষয়ক লেখার একটি হার্ডকপিসহ সফট কপির লিঙ্ক সিডির মাধ্যমে জমা দিতে হবে।
৭. একজন আবেদনকারী একাধিক বিভাগে আবেদন করতে পারবেন তবে একটি বিভাগের জন্য একটি প্রতিবেদনের বেশি জমা দেয়া যাবে না।
আবেদনপত্র জমাদানের ঠিকানা:
‘অভিবাসন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড’ ২০১৮-র কমিটির নিকট আবেদন সরাসরি/ডাকযোগে জমা দিতে হবে।
যোগাযোগের ঠিকানা:
‘অভিবাসন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড’ ২০১৮
মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম, ব্র্যাক
ব্র্যাক সেন্টার, ৭৫ মহাখালী (১২ তলা)
ঢাকা-১২১২
বাংলাদেশ
আবেদনের শেষ তারিখ
‘অভিবাসন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড’ কমিটির নিকট ২০১৯ সালের ২০শে ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫টার মধ্যে আবেদন উক্ত ঠিকানায় পৌঁছাতে হবে। নির্ধারিত সময়সীমার পরে কোনো আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে না।
বিচারকমণ্ডলী
যেসব সংস্থার সম্মানিত বিচারকমন্ডলীর দ্বারা আবেদনকৃত প্রবন্ধ/অনুসন্ধানী প্রতিবেদন মূল্যায়ন করা হবে:
১. প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি।
২. গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের একজন শিক্ষক।
৩. নাগরিক সমাজের একজন প্রতিনিধি।
৪. গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান
‘অভিবাসন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড’-২০১৮ অনুষ্ঠিত হওয়ার তারিখ সংশ্লিষ্টদের যথাসময়ে জানানো হবে।